
দূর পাল্লার চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন ৫ যাত্রী। আহত হয়েছেন আরো দু’জন। গুরুতর আহত দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আকস্মিক এ হামলায় হতভম্ব চিকিৎসক, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সবাই। কুমিল্লার চান্দিনায় ইউনিক পরিবহনের একটি বাসে এ রোমহর্ষক হামলায় কে বা কারা জড়িত তা তাৎক্ষনিক ভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
শবেবরাতের মধ্যরাতে পেট্রোল বোমা হামলায় গুরুতর আহত ৫ জনের মধ্যে ২ জনকে বুধবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আনা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের উপদেষ্টা অঞ্জন কুমার দের শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন রাঙ্গামাটি মহিলা কলেজের অধ্যাপক রণজিৎ শর্মা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক অ্যান্ড বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা: সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘দু’জনের বার্নই খুবই কিন্তু মারাত্মক বার্ন। কারণ হচ্ছে, দুজনেরই ইনহেলেশন বার্ন। আবার সেই পেট্রোল বোমার বার্ন। এটা আমার কাছেও খুব আশ্চর্য লাগছে যে, হঠাৎ করে শবে বরাতের রাতে পেট্রোল বোমা মেরে এই দুইটা নিরীহ মানুষকে কেন আক্রান্ত করা হল। দু’জনই খুবই আশঙ্কাজনক, কেউ আশঙ্কামুক্ত নয়। এই চিন্তা করেই দু’জনকেই আইসিইউ-তে নিয়ে এসেছি।’
ইউনিক পরিবহনের আক্রান্ত বাসের সুপার ভাইজার মেহেদী জানান, ৩৬ জন যাত্রীসহ ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটির উদ্দেশে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ছেড়ে যাওয়া বাসটি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাগুর বাসস্ট্যান্ড পার হতেই আক্রান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘কোন গ্যাঞ্জাম দেখলাম না, মিছিল-মিটিং দেখলাম না হুট করে সাইড থেকে একটি বোমা মারা হল। চলন্ত গাড়িতেই হামলা চালানো হয়। গাড়ির গ্লাসে হামলা করা হলে গ্লাস ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে বিস্ফোরিত হয়। এতে দু’জন যাত্রী বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাথার চুল, শার্ট ও প্যান্টে আগুন ধরে যায়। তখন দ্রুত গাড়ি থামিয়ে দরজা খুলে দিলে সব যাত্রী বের হয়ে যায়। কেউ কেউ গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গেও বের হয়ে যায়।’
বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আকস্মিক এই পেট্রল বোমা হামলার জন্য দায়ী কারা তাৎক্ষনিকভাবে তা জানাতে পারেনি পুলিশ।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ মো: আবিত হোসেন বলেন, ‘গত তিনমাসের যে নাশকতা ছিল ওই সময়েও নাকি এখানে একটি এরকম ঘটনা ঘটেছিল। এখন তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা চেষ্টা করছি, এদেরকে খুঁজে বের করব ইনশাআল্লাহ এবং আমরা অলআউট অপারেশন করব ইনশাআল্লাহ।’
এদিকে দগ্ধদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে বেশ কয়েকজনকে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক