আবার ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি।এমনি তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্থানীয় এটিএম কার্ড জালিয়াতির রেশ কাটতে-না-কাটতেই এবার আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জালিয়াত চক্র। এ বিষয়ে আলোচ্য ব্যাংকের সংশ্লিøষ্ট বুথগুলোর লেনদেনের সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত তথ্য যাচাই-বাছাই শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ দিকে এটিএম কার্ড জালিয়াতি বন্ধে অধিকতর সতর্কতা হিসেবে পিন ভুলের কারণে গ্রাহকের যেসব কার্ড বুথে আটকে যাচ্ছে ওই কার্ড ফেরত না দিয়ে নতুন কার্ড ইস্যু করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এর আগে চারটি ব্যাংকের স্থানীয় কার্ড অর্থাৎ এটিএম কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের প্রায় ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে জালিয়াতি করা হয়েছিল।
সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এর আগে আসেনি। প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনটি বুথ থেকে কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের ৩৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায় জালিয়াত চক্র। ওই সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড অর্থাৎ ভিসা ও মাস্টারকার্ড বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে জালিয়াতি হতে পারে। তবে যে দেশের এটিএম বুথ ব্যবহার করে অর্থ জালিয়াতি করা হবে ওই দেশের মুদ্রা পাবে জালিয়াতরা। ওই সূত্র জানিয়েছে, আপাতত মনে করা হচ্ছে বাইরে থেকে কার্ড জালিয়াতি হয়েছে, আর প্রিমিয়ার ব্যাংকের বুথ ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল এক সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রেটিড কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থ উত্তোলনের দায় ব্যাংক এড়াতে পারবে না। কারণ ব্যাংকগুলো নিয়মিত তাদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তদারকি করলে আর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে জালিয়াত চক্রকে সহজেই শনাক্ত করা যেতে পারত। কিন্তু ব্যাংকগুলো এ ক্ষেত্রে গাফিলতির পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর একটি সূত্র জানায়, এটিএম কার্ড নিয়ে তাদের উদ্বেগ অনেক ক্ষেত্রেই কেটে গেছে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এটিএম কার্ড জালিয়াতি ঠেকাতে এক মাসের মধ্যে সব এটিএম বুথে এন্টি ডিভাইস স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো এ নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করলে সঙ্কট কেটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু ভিসা ও মাস্টারকার্ড নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। এ বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এবং গোয়ন্দা সংস্থা থেকে আলাদা আলাদাভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। শিগগিরই এর সাথে জড়িতদের শনাক্ত করা যাবে বলে সূত্র জানিয়েছে। এরকম জালিয়াতির পুনরাবৃত্তি দেশের ব্যাংকের জন্য হুমকিস্বরূপ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।