আর্থ নিউজ ২৪ (নিউজ ডেক্স): জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে দোকান বন্ধ করে রাস্তায় সমাবেশ করেছেন আজিজ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। আজ রোববার থেকে আগামী মঙ্গলবার (সাপ্তাহিক ছুটি) পর্যন্ত মার্কেটের সব দোকান বন্ধ রাখবেন তাঁরা।
দুপুর ১২টার দিকে মার্কেটের সামনের রাস্তায় আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সমাবেশ শুরু করে। এতে বক্তব্য দেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ফয়সালের বাবাই তো বিচার চাননি। আমরা আর কী বিচার চাইব? আমরা চাই এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে।
ব্যবসায়ীদের হাতে হাতে ছিল পোস্টার। তাতে লেখা ‘কেন এমন হত্যা?’ , ‘প্রকাশক দীপন হত্যার বিচার চাই’, ‘কেন এমন মৃত্যু?’ । হত্যার প্রতিবাদে কালো ব্যাজ পরেন ব্যবসায়ীরা। ‘আমার ভাই মরল কেন?’ , ‘বিচার চাই, বিচার চাই’ বলে স্লোগান দেন তাঁরা।
সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে যান ব্যবসায়ীরা। পরে তাঁরা ফয়সালের জানাজায় অংশ নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর ফয়সালের জানাজা হবে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী অভিজিৎ চৌধুরী, সানাউল্লাহ শিশির, শাহাবুদ্দিন ফারুক প্রমুখ।
শাহবাগে বিক্ষোভ
প্রকাশক, ব্লগার ও কবির ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে আজ সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার মানুষ। সেখানে তাঁরা হামলা ও হত্যার বিচার দাবি করেন। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা রাজধানীর লালমাটিয়ার সি ব্লকে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে মালিক ও স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ চৌধুরী ওরফে টুটুলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা আরও দুজন কবি ও ব্লগার তারেক রহিম এবং রণদীপম বসুকে নৃশংসভাবে কোপানো হয়। হামলার পর কার্যালয়টি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যখন চিকিৎসা চলছিল, তখন জানা গেল, শাহবাগে আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটে আরেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ের ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন প্রতিষ্ঠানের মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপন। দুটি ক্ষেত্রেই হামলার পর কার্যালয়ের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ফয়সাল আরেফিনকে (৪৩) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ফয়সালের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট লেখক আবুল কাসেম ফজলুল হক। ছেলে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ, হতাশ এই বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কোনো বিচার চাই না। আমি চাই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে রাজনীতি করছেন, যাঁরা রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন, উভয় পক্ষ দেশের সর্বনাশ করছেন। উভয় পক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। এটুকুই আমার কামনা। জেল-ফাঁসি দিয়ে কী হবে।’