১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আকাশে আলোর ঝলকানি, সাকরাইন উৎসবে মাতোয়ারা পুরান ঢাকা

পৌষের শেষ দিন আজ মঙ্গলবার। পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের জন্য আজ সাকরাইন উৎসব। সারাদিন আকাশে উড়ল, রং-বেরঙের ঘুড়ি। আঁধার নামতেই আকাশ আরও বর্ণিল আতশবাজির আলোকছটায়। ছিল ফানুসও। তবে নানা বিধিনিষেধের কারণে চারশ বছরের পুরনো সাকরাইন উৎসব এবার কিছুটা ঢিলেঢালা ছিল।

 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পরই পুরান ঢাকার আকাশজুড়ে ছিল আলোর রোশনাই। ভবনের ছাদে ছাদে দেখা যায় আলোকসজ্জা। বাড়ির ছাদে ছাদে লাইট শো, ডিজে, আতশবাজি উৎসবের মূল আকর্ষণ। আতশবাজিতে ছেয়ে যায় রাতের আকাশ।

 

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের সাথে মিশে গেছে এই উৎসব। বছরজুড়ে এখানকার মানুষ অপেক্ষায় থাকে দিনটির। প্রত্যেক বাড়ির ছাদে ছাদে চলে নানা আয়োজন।

মোঘল আমল থেকেই ঢাকায় এই উৎসব পালিত হয়। পৌষ-মাঘের সন্ধিক্ষণে খাজনা আদায় শেষে ঘুড়ি উৎসব আর খানাপিনার আয়োজন করতেন ঢাকার নবাবরা।

 

নাটাই সুতোর খেলা সন্ধ্যায় হয়ে ওঠে আরও বর্ণিল আর বৈচিত্র্যময়। প্রতিটি ছাদের আয়োজন নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। তরুণদের মুখে-মুখে দুঃসাহসিক আগুনের ঝলকানি সাকরাইনে আনে ভিন্ন মাত্রা। ঘুড়ির বদলে রাতের আকাশে দখল নেয় ফানুশ।

 

আতশবাজির বর্ণিল আলোকছটা আর উৎসবের বহুমাত্রিক আয়োজনে মাতোয়ারা হন পুরান ঢাকাবাসী। এক ছাদে এক হয়ে নাচে-গানে ঝালিয়ে নেন আত্মীয়তার মেলবন্ধন।

যেভাবে এলো সাকরাইন

সাকরাইন শব্দটি সংস্কৃত শব্দ সংক্রাণ থেকে এসেছে। যার আভিধানিক অর্থ হলো বিশেষ মুহূর্ত। অর্থাৎ বিশেষ মুহূর্তকে সামনে রেখে যে উৎসব পালিত হয় তাকেই বলা হয় সাকরাইন। এই সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অনেক দেশেই উৎসব পালিত হয়, তবে ভিন্ন ভিন্ন নামে। বাংলায় দিনটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৪০ সালের এই দিনে মোঘল আমলে নায়েব-ই-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খানের আমলে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। সেই থেকে দিনটিকে ঘিরে উৎসব আনন্দে মেতে ওঠেন পুরান ঢাকার মানুষেরা। ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ না রেখে সবাই এই উৎসবে শামিল হন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ