[english_date]

অহেতুক লজ্জা ঢাকতে গিয়ে ধর্ষণ ও খুন !

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে জাকিয়া খাতুনকে (৪০) ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের কান্দিপাড়া বাজারের পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে। বুধবার দুপুরে উপজেলার পাগলা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের আবু সাহিদের স্ত্রী জাকিয়া খাতুন ২ মাস পূর্বে গর্ভবতী হয়ে পড়েন। ওই গৃহবধূর মেয়ের নাতি থাকায় লজ্জায় গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য সোমবার কান্দিপাড়া বাজার পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে আসেন। এ সময় পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রাজন দত্ত গৃহবধূ জাকিয়া খাতুনের কাছে গর্ভের সন্তান নষ্টের জন্য ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন গৃহবধূ জাকিয়া নিজেকে গরীব মানুষ জানালে মেডিকেল অফিসার রাজন দত্ত ৪ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে জাকিয়া এক হাজার টাকা নিয়ে মেডিকেল অফিসার রাজনের কাছে গেলে তিনি সন্তান নষ্টের জন্য আড়াই হাজার টাকা দাবি করেন। এতে জাকিয়া বাড়ি চলে আসেন।

 এরপর দুপুর ২টার দিকে তার মুঠোফোনে ফোন করে মেডিকেল অফিসার রাজন দ্রুত টাকা নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে আসতে বলেন। এ অবস্থায় তিনি  বাধ্য হয়ে এক হাজার টাকা দাদন নিয়ে পুনরায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ওই ডাক্তারের কাছে যান।

 এরপর থেকে গৃহবধূ জাকিয়া নিখোঁজ ছিল।
নিহত গৃহবধূ জাকিয়ার মেয়ে জোনাকি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমি সন্তানের মা এ কারণে লোক লজ্জার ভয়ে আমার মা নিজের গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ডাক্তার রাজন দত্তের কাছে যান। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে মায়ের ফোনটি ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরক্ষনেই আবারো ফোন দিলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার দাবি ওই ডাক্তার তার মাকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের পেছনের লাশ ফেলে রাখে রাজন ডাক্তার।
পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার রাজন দত্ত হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন দুপুর ৩টার দিকে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে তালা বদ্ধ করে আমি ময়মনসিংহ চলে যাই।
তবে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক আয়েশা খানম জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে আমরা সকলেই পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে তালা বদ্ধ করে চলে আসি। সে সময় রাজন দত্ত পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র সংলগ্ন তার ভাড়া বাসায় চলে যান।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী মহিউদ্দিন বলেন, বুধবার সকাল ১০টার দিকে রাজন দত্ত আমাকে ফোন করে জানান, ভাই একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, আমাদের পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের পিছনে এক মহিলার লাশ পাওয়া গেছে। বার বার সুলতান স্যারকে ফোন করছি কিন্তু তিনি ফোন ধরছেন না। দয়া করে আপনি স্যারকে বিষয়টি জানাবেন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সুলতান আহমেদ বলেন, আমি ঢাকার ডিজি অফিসে মিটিংয়ে রয়েছি। এ বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবো।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবা আজিজ বলেন, বিষয়টি ডা. সুলতান সাহেব অবগত রয়েছেন। আপনারা তার সঙ্গে কথা বলেন।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ওসি চাঁন মিয়া বলেন, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রাজন দত্তসহ ওই কেন্দ্রের কেউ আমাদের সন্দেহের বাইরে নন।
গফরগাঁও সার্কেলের সিনিয়র এ এসপি বিল্লাল হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এই মুহূর্তে কোন বক্তব্য প্রদান করা যাচ্ছে না।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ