[english_date]

অসহায় স্বীকারোক্তি, “আমার হাত পিছলেই পড়ে যায় আইলান।”

সুমদ্রের তটে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা ছোট্ট শরীরটা দেখে থমকে গিয়েছে বিশ্ব। সিরিয়ার সন্তান ৩ বছরের ছোট্ট আইলান কুর্দি। লাল টি-শার্ট, নীল প্যান্ট অক্ষত। ছোট্ট পায়ে সযত্নে পরানো রয়েছে জুতোজোড়াও। শুধু দেহে নেই প্রাণ। সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজ মিলিয়ে যাচ্ছে বাবার কান্না। অসহায় স্বাকারোক্তি, “আমার হাত পিছলেই পড়ে যায় আইলান।”

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে আইলানের বাবা আবদুল্লা কুর্দি জানিয়েছেন, কীভাবে চোরকারবারিরা তাদেরকে গ্রিস পার করানোর জন্য নৌকায় তুলেছিল। নৌকাটা সোজা রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু একে একে হাত পিছলে পড়ে যায় সকলেই। চোখের সামনে তলিয়ে যায় স্ত্রী, দুই পুত্র। তার মাত্র ৪,৫ মিনিট আগেই বিপদ আঁচ করে পালিয়ে গিয়েছে জলদস্যু। সমুদ্রের ঢেউয়ে উথালপাতাল নৌকায় তখন মোট ১২ জন যাত্রীর সঙ্গেই রয়েছেন সপরিবার আবদুল্লা কুর্দি। স্ত্রী রেহান ও দুই পুত্র। ৫ বছরের গালিব, বছর তিনের আইলান।

কুর্দি বলেন, “একটা বিশাল বড় ঢেউ নৌকাটা ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। আমি স্ত্রী ও দুই ছেলেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমার চোখের সামনেই একের পর এক সব শেষ।” সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল সমুদ্রতটে উপুর হয়ে পড়ে থাকা আইলানের দেহের ছবি। উদ্বাস্তুদের প্রতি ইউরোপের দেশগুলির অবহেলার এক ভয়াবহ নিদর্শন হিসেবেই বারবার উঠে আসছে এই ছবি। তার সঙ্গেই এক বাবার আর্তি, “নিজেদের দেশে যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে আমরা এই দেশে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু এখানেই যেন শেষ হয় এই ঘটনার।”

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের কোবানি শহরের বাসিন্দা কুর্দি পরিবার। গতবছর থেকেই আইসিস-কুর্দ যুদ্ধের কেন্দ্রভূমি হয়ে ওঠেছে কোবানি। সিরিয়া ও ইরাকের মতো দেশে ক্রমশ আইসিসের প্রভাব বিস্তার করার ফলে দেশ ছেড়ে গ্রিস সীমান্তে আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষা রিফিউজি পরিবার।

গত ৪ বছরে সিরিয়ায় যুদ্ধে মারা গিয়েছে ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। দেশ ছেড়েছেন ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ