১০ ডিসেম্বর
টাঙ্গাইল মুক্তদিবস
১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল সূর্যসেনারা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করে। উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। অর্জিত হয় দেশের স্বাধীনতা। যুদ্ধকালীন সময়ে টাঙ্গাইলের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ যুদ্ধের ইতিকথা দেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পরে বিশ্বব্যাপী। বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত ও পরিচালিত “কাদেরিয়া বাহিনীর” বীরত্বের কথা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এখনও চিরস্মরনীয় হয়ে আছে।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরুতেই টাঙ্গাইল জেলা স্বাধীন বাংলা গণমুক্তি পরিষদ গঠন করা হয়। চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। ২৬ মার্চ থেকে গ্রামে গ্রামে যুবকরা সংগঠিত হতে থাকে। ৩ এপ্রিল প্রথম পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের অবরোধ ভেঙ্গে শহরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে চলে আসে। তারা নতুন করে অস্ত্র সংগ্রহ ও সংগঠিত হতে থাকে। অল্প দিনের মধ্যেই ১১ নং সেক্টরের অধীনে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গড়ে উঠে বিশাল “কাদেরিয়া বাহিনী”। জেলার পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে শুরু হয় হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ। খন্দকার আব্দুল বাতেন বাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত “বাতেন বাহিনীও” জেলার পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। চারদিক থেকে আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকবাহিনী। দেশে এবং দেশের বাইরে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করতে চলে গণসঙ্গীত।
১০ ডিসেম্বর বিকেলে কালিহাতীর পৌলিতে মিত্রবাহিনীর প্রায় ২ হাজার সেনা অবতরন করায় হানাদারদের মনোবল একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। তারা ছুটতে থাকে ঢাকার দিকে। ১১ ডিসেম্বর ভোর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করতে থাকে। টাঙ্গাইল শহর সম্পূর্ণ হানাদার মুক্ত হয়। মানুষ নেমে আসে রাস্তায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধারাও আনন্দের জোয়ারে ভাসতে থাকে। “জয় বাংলা” শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে টাঙ্গাইলসহ দেশের আকাশ বাতাস।
পাক হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকাররা মুক্তিযুদ্ধ চালাকালে অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে টাঙ্গাইল শহরের জেলা সদর পানির ট্যাঙ্কের পাশে বধ্যভূমিতে নির্মমভাবে হত্যা করে। পাক বাহিনীর বর্বরতার সাক্ষী এই বধ্যভূমিটি সংরক্ষনের উদ্যোগ বিজয়ের ৪০ বছরেও নেওয়া হয়নি। অপরদিকে দেশ মাতৃকার জন্য জীবন বাজি রেখে যারা যুদ্ধ করেছিলো আজও তাদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়না। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অনেকেই।
মুন্সিগঞ্জ মুক্তদিবস
১১ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয় মুন্সিগঞ্জ। গৌরবময় বিজয়ের ৪১ বছর পূর্তিতে যখন শারাদেশে নানা আয়োজন তখন মুন্সিগঞ্জ জেলার মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বজন হারানো পরিবারগুলোর আর্ত্মনাদ যেনো আজো থামেনি।
২৬ মার্চ সকালে এ অঞ্চলের মুক্তি পাগল ছেলেরা মুন্সিগঞ্জ সদর থানার হানাদার ক্যাম্প এ অভিযান চালায়। দেশ মুক্ত করার প্রত্যয়ে থানার হানাদার ক্যাম্পে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে জয় বাংলা শ্লোগানে উড়ায় মানচিত্র খচিত বাংলার পাতাকা। নেতৃত্ব দেয় মুক্তিযোদ্ধা সুভষ চন্দ্র সাহা। যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে সে জন্য তাকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য। রাজাকারদের সহযোগিতায় ১৪ মে তার বাবা ও ভাইসহ পরিবারের ১৪ জনকে ধরে নিয়ে একসাথে ব্রাসফায়ার করে মারা হয় জেলা সদরের কেওয়ার এলাকার একটি খালের পাশে। আজো সে কথা ভূলতে পারেনি তার পরিবার।
৯মে গজারিয়ায় ঘটে ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ ষটায় পাক হানাদার ও তাদেও দোষররা। ফজরের আযানের সময় লঞ্চঘাটে থামে পাক নৌ-বহর। কিছু না বুঝে উঠার আগেই হত্যা করা হয় ৩৬০ জন নিরহ মানুষকে। অসহায় মানুষের রক্ত এসে মিশে যায় মেঘনার ঘোলা জলে।
যুদ্ধের ৯মাস জেলার বিভিন্ন স্থানে চলে ছোট,বড় অভিযান। লৌহজং এর গোয়ালী মান্দ্রায় সম্মুখ যুদ্ধে পাক হানাদাররা পরাস্ত হয়। চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে ১১ ডিসেম্বর ভোর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মুন্সিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন দিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীর সব চাইতে বড় ক্যাম্প হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রাবাসের দিকে এগুতে থাকে। ততক্ষনে বর্বর পাকিস্তানী হায়নারা বুঝতে পারে তাদের সময় ফুরিয়ে গেছে। দুপুরের আগেই ক্যাম্পের সব দিক ঘিরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধারা। কোন কুল কিনারা না পেয়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পন করে। শক্রমুক্ত মুক্ত হয় পদ্মা,মেঘনা,ধলেশ্বরী ইছামতি বিধৌত মুন্সিগঞ্জ।
জামালপুর মুক্তদিবস
১৯৭১ সনের এই দিনে হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে অকুতভয় মুক্তিসেনারা জামালপুরকে শত্রুমুক্ত করে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১১ নং সেক্টরের অধীন জামালপুরের বিভিন্নস্থানে হানাদারবাহিনী তাদের দোসর আল-বদর রাজাকারদের নিয়ে ব্যাপক ধ্বংশযজ্ঞ চালায়, হত্যা করে অসংখ্য মুক্তিকামী বাঙ্গালীকে।
একাত্তরের ২২ এপ্রিল হানাদার পাকবাহিনী জামালপুরে প্রবেশ করে। জামালপুরে স্থাপন করে পাক হানাদার বাহিনীর ৩১ বালুচ রেজিমেন্টের হেডকোয়ার্টার। যুদ্ধকালীন সময়ে জেলা সদরের পিটিআই হেড কোয়াটার, বর্তমান ওয়াপদা রেস্ট হাউস, আশেক মাহমুদ কলেজের ডিগ্রি হোস্টেল টর্চার সেল, ব্রহ্মপুত্রের তীরে শ্মশান ঘাট বধ্যভূমি, ফৌতি গোরস্থান বধ্যভূমিতে ধরে এনে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী বাঙ্গালীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সরিষাবাড়ীর বারই পটল এলাকায় একদিনেই হত্যা করা হয় শতাধিক মুক্তিকামী বাঙ্গালীকে। চিহ্নিত না করায় বধ্যভূমি ও গণকবরগুলো এখনো পড়ে আছে অরক্ষিত অবস্থায়। ৪ ডিসেম্বর কামালপুর বিজয়ের পর মুক্তি বাহিনী চর্তুদিক থেকে জামালপুরকে ঘিরে ফেললে হানাদার বাহিনীও আত্মরক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এক পর্যায়ে ১০ ডিসেম্বর দিন ও রাতব্যাপী মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমনে হানাদার বাহিনী পরাস্ত হলে ১১ ডিসেম্বর ভোরে কোম্পানী কমান্ডার ফয়েজুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিসেনারা হানাদার বাহিনীর হেড কোয়ার্টার পুরানা ওয়াপদা ভবনে স্বাধীন বাংলার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্ত হয় জামালপুর। জামালপুর মুক্ত করার যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ২৩৫ জন সৈন্য নিহত হয় এবং ৩৭৬ জন হানাদার সৈন্য আত্মসমর্পন করে। আর এই যুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ১১জন শহীদ হয়।
স্বাধীনতার ৪১ বছর যাবত মুক্তিযুদ্ধের এসব স্মৃতিচিহ্ন অযতœ অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে। আশেক মাহমুদ কলেজ ডিগ্রি হোস্টেল টর্চার সেল পরিণত হয়েছে গরুর খোয়াড়ে। একটি বেসরকারী সংস্থার উদ্যোগে সরিষাবাড়ির বারইপটল (বর্তমান নাম শহিদ নগর) বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতি সৌধ নির্মানের কাজ চলছে। মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাথা তুলে ধরতে টর্চার সেল, বধ্যভূমি, গণকবরসহ সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে এটাই এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের দাবি।
ভোলা মুক্তদিবস
১৯৭১সালের ১০ ডিসেম্বর ভোলা হানাদার মুক্ত হয়। ৭১ এর ৪ঠা নভেম্বর ভোলার দৌলতখান উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের গরুচৌখা খালে ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক-হানদার বাহিনীর সর্বশেষ যুদ্ধ হলে সেখানে হানাদার বাহিনীর ৯ সদস্য নিহত হয়। এর পর ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও সদস্য বৃদ্ধির খবর পেয়ে পাক বাহিনী তাদের অভিযান বন্ধ রাখে। পরে ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ইউনিটের সদস্যরা এক হয়ে প্রায় ১মাস যাবৎ পাক হানাদার বাহিনীকে ভোলার যুগির ঘোলের ওয়াপদা কলোনীতে নজর বন্ধি করে রাখে। ১০ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে পাক হানাদার বাহিনীর ২টি দল ভোলা খালের চিতাখোলার সামনে থেকে এমভি তৃনা নামের একটি লঞ্চ দিয়ে পালিয়ে যেতে প্রস্তুতি নেয়। এর পর ভোলার সঙ্গবদ্ধ মুক্তি যোদ্ধারা তাদেকে পেছন থেকে আক্রম করার চেষ্টা করলে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ করে গুলি ছুরে নিরাপদে চলে যায়। এ খবর ভোলার সকল উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌছলে তারা ভোলা শহরে এসে সমবেত হয়। তাদের সাথে যোগ দেয় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। পরে মুক্তিযোদ্ধা ও সম্মিলিত জনতা ভোলা যুগিরঘোল চত্তর থেকে পতাকা হাতে নিয়ে বিজয় মিছিল বের করে পুর শহর প্রদক্ষিণ করে।
উল্লেখ্য ৭১এর মে মাসের ৩ তারিখে পাক হানাদার বাহিনীর ২টি দল লঞ্চ যোগে ভোলায় প্রবেশ করে যুগির ঘোলের ওয়াপদা কলোনী দখল করে। তারা ভোলাতে মোট ৭মাস ৭দিন অবস্থান করে। তারা সর্ব প্রথম আক্রমন চালায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা ইউনিয়নে এভাবে তারা ভোলার চরফ্যাশন, লালমোহন, দৌলতখান ও ভোলা সদর উপজেলায় আক্রমন চালায়। তাদের নির্মম অত্যাচারের প্রধান ২টি স্থান ছিল যুগির ঘোলের ওয়াপদা কলোনী ও ভোলা লঞ্চ ঘাট। তারা মুক্তিযোদ্ধা ও অসহায় নারী-পুরুষদের ধরে এনে প্রথমে ওয়াপদার টর্চার সেলে হাত-পা বেধে নির্যাতন চালাত। পরে তাদেরকে ট্রাক ভর্তি করে লঞ্চ ঘাট তেতুলিয়া নদীর পারে এনে সারিবদ্ধ ভাবে দার করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে নদীতে লাশ ফেলে দিত। তাদের নির্মম নির্যাতনে ভোলার ৭৯জন মুক্তি যোদ্ধাসহ অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুরা প্রাণ হারায়।
নওগাঁ মুক্তদিবস
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে একজন অন্যতম মহান সংগঠক ছিলেন আব্দুল জলিল । ১৯৭২ সালে আত্রাই রাণীনগর নকশালী রাজনীতির ব্যাপক তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। শ্রেণী শক্র খতমের নামে নকশালরা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আব্দুল জলিল নিজের জীবন বিপন্ন করে বড় ঝুঁকি নিয়ে নকশালদের ব্যুহ ভেঙ্গে চুরমার করে রক্তাক্ত প্রান্তরে সোনালী সূর্য্যরে আলো প্রদান করেন। দমন করেন নকশালী তৎপরতা।
১৯৭৩ সালে তিনি সর্ব্ব প্রথম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নওগাঁ সদর আসনে এম.পি. নির্বাচিত হন। দেশ পুনর্গঠনের কাজে পুরো মাত্রায় আত্মনিয়োগ করেন। কিন্তু বিধি বাম স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্ররা মাথাচারা দিয়ে উঠে।
মানবতা বিরোধীরা, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আলবদর আলশামস্ বাহিনী ও দেশী বিদেশী শক্ররা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের অতর্কিত হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার গোটা পরিবারকে হত্যা করে। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে জারি করা হয় সামরিক শাসন। গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় গলা টিপে। অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আব্দুল জলিলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘ ৪ বছর কারাভোগের পর ১৯৭৯ সালে তিনি মুক্তিলাভ করেন।
১৯৮২ সালে পুনরায় সামরিক শাসন জারি করার পর গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুল জলিলকে। ১৫ দিন অজ্ঞাত স্থানে বন্দী রেখে অবর্ণনীয় দৈহিক নির্যাতন চালানো হয় তার উপর । জেলে থাকা অবস্থায় তাঁর মা’র মৃত্যু হলেও সামরিক জান্তা মাতৃ মুখখানা এক নজর দেখার জন্য কোন সুযোগ দেয় নাই।
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ৯ মাসের যোদ্ধাদের খরচ মোকাবিলায় মোঃ আব্দুল জলিল ভারতের প্রত্যেকটি রিসিপশন ক্যাম্পের জন্য নওগাঁ ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ব্যাংক থেকে ৭১,৮০,০০০/- টাকা তিনি ব্যাংকের ভোল্ট রেজিষ্টারে এন্ট্রি করে উক্ত টাকা গ্রহণ করেন এবং সেই অর্থ দিয়ে ভারতে মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্পগুলো পরিচালিত হত। মুক্তিযুদ্ধ শেষে বঙ্গবন্ধুর নতুন সরকারের নিকট খরচ অন্তে অবশিষ্ট ৩৪,৫২,০০০/- টাকা ফেরত দেন। উল্লেখ তিনি কোন টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেন নাই।
নওগাঁ জেলায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন নওগাঁ সদরে ১৯জন নিয়মতপুরে ৭জন পতœীতলায় ৯জন পোশায় ১জন রাণীনগরে ৪জন বদলগাছিতে ১৪জন সাপাহারে ৪জন ধামরহাটে ৯জন মাহাদেবপুরে ৩জন জেলায় মোট নামজানা ৭০জন বীর মুক্তিযুদ্ধা শহীদ হন এবং নামনাজানা মুক্তিযুদ্ধে কয়েক হাজার নিরহ নারিপুরুষ শহীদ হয়।
মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলেও এখন পযন্ত প্রকৃত মুক্তিযদ্ধের সাধ এখনও আমরা পাইনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ একনও শেষ হয়নি, মানবতা বিরোধীরা, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আলবদর আলশামস্ বাহিনীর বিচার শেষ না হওয়া পযন্ত আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সমাপ্ত হবেনা। আমাদের সপ্ন রেখে যাচ্ছি আগামি প্রজন্মের কাছে।
নওগাঁ জেলায় তালিকা ভুক্ত মুক্তিযুদ্ধার সংখ্যা ২৫৬২ এবং সদর উপজেলায় ৮৬০ জন এদের মধ্যে ৭১০ জন সদর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধা ভাতা পায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে একজন মহান অন্যতম সংগঠক আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে ইউনিট কমান্ডার সহ মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, দু’লক্ষ মা’বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর এদেশের বিজয় অর্জিত এই বিজয়ের মাসে মানবতা বিরোধীরা, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আলবদর আলশামস্ বাহিনীর বিচার ১৬ই ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ দেখতে চাই সরকারের নিকট আকুল আবেদন। ১০ই ডিসেম্বর নওগাঁয় একটানা ৩৬ঘন্টা যুদ্ধ চলার পর পাকিস্তানি হানার বাহিরি হাত থেকে মুক্ত হয়। —— চলবে